Monday, December 31

অণুগল্প : জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য



বৃত্ত

কলেজে আমাদের ছাত্রনেতা ছিল তিমিরদা।ওর বাড়ি ছিল আমাদের কাছেই ।গলির ভেতর একটা ঘরে ওরা ভাড়া থাকত।একসময়  অবস্থা ভাল ছিল ওদের ।গাড়ি বাড়ি সবই ছিল।বনেদি পরিবার ছিল ওরা।কিন্তু তিমিরদার বাবার অনেক দোষ ছিল নেশা ছিল ফলে সব হারিয়ে  শেষ পর্যন্ত ভাড়া বাড়িতে ঠাই নিতে হয়েছিল ওদের ।তিমিরদা বলত গরিব হয়ে কোনও দুঃখ নেই।বরং সর্বহারার বেদনা বুঝি ।আজীবন ওদের জন্য লড়াই করে যাব।সত্যিই তাই। তিমিরদা বস্তিতে বস্তিতে ঘুরত ।গরিবদের জন্য কাজ করত।
এরপর পড়াশোনা শেষ করে আমি চাকরি নিয়ে চলে গেলাম বিদেশে ।খবর পেতাম নেতা হিসাবে বেশ বড় জায়গায় পৌছে গেছে তিমিরদা।দেশে ফিরে আমি দেখা করতে গেলাম তিমিরদার সঙ্গে। সল্টলেকে দোতলা বাড়ি করেছে তিমিরদা। দেখলাম গাড়িও আছে গ্যারেজে।তিমিরদা মুচকি হেসে বলল ভাবছিস আমি বদলে গেছি ।হ্যাঁ কিছুটা বদলেছি আমি ।তবে গরিবদের কথা ভাবি ।রাজনীতি করি বলে আমার বউ ভাল চাকরি করে ।কিছু উপরি ইনকাম আছে আমার।আসলে কি জানিস আমরা ছিলাম বনেদি পরিবার। ছেলেবেলায় দেখেছি মা কত ভালভাবে ছিল ।তারপর অনেক কষ্ট করেছে ।মাকে তাই শেষ বয়েসে আবার সেই সুখ টুকু ফিরিয়ে দিতে চেয়েছি।
তিমিরদার কথা শুনে আমার মনে হল এভাবেও কি একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল?



No comments:

Post a Comment