Monday, December 31

অণুগল্প : শুভাশিস দাশ.


ছিট মহলের গল্প.


রতন আর এখন ছিটমহলের বাসিন্দা নয় কিন্তু রোজিনারা আর আসলো না ভারতে। চুক্তির সময় ওরা স্বাক্ষর করেছিল বাংলদেশে যাবার সম্মতি পত্রে।

ভারতের চৌধুরীহাট সীমান্ত ঘেঁষে ছিলো পোয়াতুর কুঠি। এই ছিটেই এক সাথে বেড়ে উঠেছিল রতন আর রোজিনা। চৌধুরীহাট সংলগ্ন এক প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পড়েছে দুজনে। আজ দুজন দুইদিকে।

রোজিনার বাবা একটু গোড়া টাইপের তাই রোজিনা একদিন বলেছিল আব্বাই বাংলাদেশে যাবার জন্য ব্যাস্ত হয়েছিল অথচ ওপারে নিজের কেউ নেই। শুধু মাত্র ধর্মের সংখ্যা গরিষ্ঠতা দেখে আব্বা পছন্দ করেছিল বাংলদেশ।

বরং ভারতের কাল মাটি অঞ্চলে ছিলো রোজিনার মামারা। আপদ বিপদে তাদের কাছে পাওয়া যেতো।

রোজিনা যে রতন কে ভালবাসত তা রতন টের পেতো কিন্তু ওরা জানে এই সমাজে এখনও হিন্দু মুসলমানের বিয়ে রীতি সিদ্ধ হয়নি। তাও হতো কিন্তু রোজিনার বয়স আঠারো এখনও হয় নি।

রতন ছিটমহল ছেড়ে দিনহাটা এসেছে। রোজিনারা লালমনিরহাট এ।

দিনহাটা থেকে খুব দূর নয় কিন্তু কাঁটাতার সীমান্ত এসব বড় যন্ত্রণার !আত্মীয়দের থেকে দূরেই রেখে দিয়েছে ইচ্ছে করলেও দেখা পাবার উপায় নেই !

ছিটমহল বিনিময়ের রাতে চুপ করে এসে রোজিনা ওদের ক্ষেতের একটি লাউ আর সাথে একটি চিঠি দিয়েছিলো রতনের হাতে ,বলেছিল ,দিব্যি দিয়ে বলেছিল কাল দিনহাটা গিয়ে চিঠি টা পড়তে।

রতন সারারাত চিঠি আগলে শুয়েছিল।

যখন চিঠি খুললো তখন রোজিনা বাঙলাদেশের আই কার্ডে সই করে ফেলেছে !

রতন আকাশ টাকে একবার দেখলো দিনহাটার দক্ষিণে তাকালে লালমনিরহাটের সেই রোজিনার আকাশ !

No comments:

Post a Comment