নেশা
পাথরটা হাতে নিতেই মনটা খুশিতে ভরে উঠল ভুবনবাবুর। যাক, ইচ্ছেটা পুরন হল। এই পাথর জমানোটা ওনার ছেলেবেলার অভ্যাস। গত চল্লিশ বছরে কত পাথর যে তিনি সংগ্রহ করেছেন তাই ইয়ত্তা নেই। কিন্তু পাথরগুলো যে খুব দামী তা নয়। কিছু পাথর তো খুবই সাধারণ, কিন্তু কেন জানি না ভুবনবাবুর ভালো লেগে গিয়েছিল সেগুলো।
ওনার সংগ্রহে পাথর আছে প্রায় একশটারও বেশি। আর ওনার মতে প্রতিটি পাথরের পিছনে একটা করে কাহিনী আছে। কিন্তু সেই কাহিনী যে কি সেটা উনি কাউকেই বলেন না।
যেমন গতকাল বিকেলে উনি যে পাথরটা হাতে নিয়ে উনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেটারও যে কোন বিশেষত্ব আছে তা নয়, তবে ওনার ভালো লেগে গেছে ওটা। খুবই সাধারণ একটি লালচে রঙের পাথর, যেমন পাথর অকচ্ছর দেখা যায় অ্যাকুয়ারিমে। আর ভুবনবাবুর যদি কোন পাথর পছন্দ হয়, তাহলে ওটা ওনার চাই-ই চাই।
তাই, বার দশেক চাওয়ার পরও যখন ছ-সাত বছরের ছেলেটা পাথরটা ওনাকে দিতে রাজি হল না, তখন অগত্যা তাকে ফেলে দিতে হল পাশের খাদটায়। কি আর করবেন, নেশা বলে কথা ...
কিন্তু গোল বাধল অন্য জায়গায়। ওই ছ-সাত বছরের ছেলেটারও যে ওনার মত পাথর জমানোর নেশা সেটা উনি হয়তো জানতেন না। জানার কথাও নয়। আর সেটাই হয়তো জানান দিতে গতরাতে এসেছিল ছেলেটি। ভুবনবাবুর অসাড় দেহটা পাশ থেকে নিয়ে গিয়েছিল ওর প্রিয় লালচে পাথরটা।
No comments:
Post a Comment