Monday, December 31

অণুগল্প : নির্মলেন্দু কুন্ডু




অথ-সাধারণী-কথা



নাঃ,এভাবে তো আর পারা যায় না!সকাল-বিকেল উঠতে বসতে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা আর অপমান!উদয়াস্ত খাটনির পরও পান থেকে চুন খসলেই বাঁধে কুরুক্ষেত্র৷সংসারের জোয়াল ঠেলে যখন চোখদুটো চায় একটু বিশ্রাম,তখন পিপাসা মেটাতে হয় পৌরুষত্বের৷নইলে জোটে ভালোবাসার ছোঁয়া—হাতে-পিঠে-বুকে!


অথচ সম্পর্কের সকালটা দেখে এরকম দুর্দিনের আঁচমাত্র পাওয়া যায়নি৷লাভ ম্যারেজ সুচরিতা আর তপনের৷তপন একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে৷মাইনে ভালোই৷সবথেকে বড় গুণ,ওর স্বভাব৷লোকে বলে,ওর মতো মিশুকে আর সরলমনা নাকি এ তল্লাটে আর দুটো নেই৷সবার সামনে হাসি-হাসি মুখটা যেন ওর পেটেন্ট৷গুছিয়ে খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারে ও৷আর এই সবকিছু দেখেই বাড়ির অমতেও এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছিল সুচরিতা৷শুরু করেছিল সংসার৷কিন্তু বছরখানেকের মধ্যেই কেমন যেন পাল্টাতে লাগলো তপন৷বাইরে ঠিক থাকলেও চার দেওয়ালের মাঝে ও যেন এক শ্বদন্তওয়ালা প্রাণী,যেকোন মুহূর্তে ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ফেলবে সুচরিতার স্বপ্নগুলোকে৷প্রথমদিকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও এখন আর পারে না সুচরিতা৷নতুন শহরে ঘর পাল্টে আসার পর তো আরও একলা ও৷এখানে সবাই নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত৷তাই সুচরিতাও নিজের সব যন্ত্রণাকে বুকে চেপে রাখে৷কিন্তু আর তো পারা যাচ্ছে না!এবার তো তপন সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করে দিয়েছে!ওর অফিসের বসকে বাড়িতে ইনভাইট করেছে ও আর তারপরেই সুচরিতাকে দিয়েছে ঘৃণ্যতম প্রস্তাব৷আজ এর একটা বিহিত করেই ছাড়বে সুচরিতা৷


রান্নাঘরে দাঁড়িয়েই আশু কর্তব্য ঠিক করে ফেললো সুচরিতা৷বাড়িতে এখন তপন নেই৷ওই লোকটাকে রেখে বেরিয়ে গেছে,সুচরিতাকে দিয়ে গেছে শুধু শীতল চাহনি৷লোকটাকে বেডরুমে বসিয়ে সুচরিতা এসছে লস্যি করতে৷সাত-পাঁচ না ভেবেই সুচরিতা চুপি চুপি  পা বাড়ালো সদর দরজার দিকে৷


এমন সময়—

"ভ্যাঁ......."

ঘুম ভেঙে গেছে তিতলির৷যেতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালো সুচরিতা৷একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল বুক ভেঙে৷ও পা বাড়ালো বাড়ির ভেতর দিকে

No comments:

Post a Comment