Monday, December 31

গল্প : দীপালোক ভট্টাচার্য






মোক্ষম

১.

মেয়েটার চোখে আগুন দেখতে পেল নবারুন। ঠিক বুঝে উঠতে পারল না। আসলে কোন কোন সমীকরণ সময় মত মেলে না। মেলানোর চেষ্টা করলেও। এতকাল কোনো ভুলচুক হয় নি। স্কুল বেলার অংক বইয়ের পেছনে যে উত্তর দেওয়া থাকত, সেরকম ভাবেই অংক করে উত্তর মিলিয়ে দিয়েছেন   এতকাল। গত পনের বছর ধরে একটা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের চেয়ারে তো এমনি এমনি বসেনি। সে চেয়ারে কাঁটা ছিল। ক্ষমতার আশেপাশে যেমন আঁশটে গন্ধ লেপটে থাকে প্রায় সবসময়, কিন্তু সে গন্ধটায় আর গা গোলায় না একসময়, অভ্যেস হয়ে যায়, সেই পূতিগন্ধময় পরিবেশটাকেই মনে হতে থাকে খুব আপন।

শুরুটা অবশ্য অন্যরকম ছিল। তখন সদ্য কলেজ পাশ করে আসা নব্যযুবার চোখে সমাজ বদলের স্বপ্ন। শহরের কলেজে পড়তে পড়তে ছাত্ররাজনীতির অআ ক খ বুঝে উঠতে সময় লেগেছিল অনেকটা। তবে সেই কুড়ি একুশ বছর বয়সের রোগা পাতলা ছেলেটা যেটা বুঝেছিল, শহুরে ছাত্র-রাজনীতির স্লোগান আর বক্তৃতাময় জগতে সে হাঁসফাঁস করবে কিছু দিনের মধ্যে। খাতায় কলমে  রাজনীতির যে  পাঠ সে নিয়েছিল, নবারুন দেখল বাস্তবের জমিটা অনেক বেশী এবড়ো খেবড়ো। সেখানে স্বপ্নের সাথে নির্দিষ্ট অনুপাতে মেশাতে হবে ধান্দাবাজি আর চাতুর্য। নবারুন ভাবল, এর চেয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়াই ভালো। বাবার এক ছেলে। দিদিটার বিয়ে হয়ে গেছে বছর খানেক। বাবা গ্রামের পোষ্ট অফিসের পিওন আর আবসর সময়ের কৃষক। চার পাঁচ বিঘা জমির ধানে, সব্জিতে বছরভর খাওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। গ্রামে ফিরে সে বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হবার লোভনীয় প্রস্তাব টা ফেলতে পারেনি নবারুন। পার্টিও চাইছিল নতুন মুখ। শিক্ষিত, বুঝদার, মিতভাষী একটা মুখ যে গ্রামের মানুষের কথাটা অন্তত স্মিত মুখে শুনবে, বিপদে আপদে পাশে গিয়ে দাঁড়াবে, হাসিমুখে ইনকাম সার্টিফিকেট বিলোবে।

কিন্তু সে মুখটা কীভাবে মুখোশে বদলে গেল, নবারুনের মনে পড়ে না। কত সময় নিল বদলাতে? রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে এই অনিবার্য বদল, নবারুনের এক এক সময় মনে হয়, এক ধরনের অভিযোজন। তবে প্রকৃতিতে যেমন কোটি কোটি বছর লাগে অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মে স্থানান্তরিত হতে, নবারুনের ক্ষেত্রে সেটা লাগল বছরখানেক।

এমনি এক পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পার্টি অফিসের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে থেকে বেরিয়ে এসে নবারুন আবিষ্কার করে, সে যেন এক অন্য কেউ।

-      বুঝলা নবারুন, আমাদের পার্টির বইতে যা লেখা আছে, সেইটা দিয়া তো আর ভোটে জেতা যায় না। ভোটে জিততে গেলে কিছু খরচ পাতি তো তোমাকে করতে হবে। সমীর প্রধান, যে ছিল সেই সময়কার লোকাল কমিটির সেক্রেটারী, ফিসফিস করে বলল নবারুন কে। এখন কথা হইচে, তোমার তো এইডাই পেশা, রাজনীতিটা। চাকরি বাকরি কর না। গেল বছর বিয়া করছ। শুনলাম বউমা পোয়াতি। ভালো কথা। শুন, যা কইতাছি শুন মন দিয়া। ভাব। তারপর সিদ্ধান্ত নিবা। তো এই নির্বাচনের খরচ কীভাবে তুলবা। এখন আর আমাদের দিন নাই যে, পুলাপান পুরান পেপারে আলতা দিয়া পোষ্টার লিখব, মিছিলে চিল্লায় গলা ফাডায় দিব, চোং লাগায় তুমি বক্তৃতা দিবা, আর লোকে তোমার নামের পাশে ছাপ দিব। দিনকাল পালটায় গেছে নবারুন। আমরাও কিছুটা সইরা আসচি। খাতায় কলমে না হইলেও বাস্তবের নিরিখে। শুন, যতই কাজ কাম কর, ভোটের আগে ব্যাক্তিগতভাবে লোকের কিছু চাওয়া পাওয়া আছে। তাছাড়া পুলাপানগুলা যে তোমার হয়ে জান লাগায় দিব, এমনি এমনি দিব? ক্যান দিব কও? ওদেরো কিছু চাওয়া পাওয়া আছে।

  - ক্যান কাকা, এতদিন যে আমরা কৌটা ঝাকায় চান্দা তুলচি। কুপন ছাপায় নির্বাচন তহবিল গড়চি। চলতে তো। মানুষ তো আমাদেরই জিতাইচে। তাইলে ... নবারুন কথা খুঁজে পায় না।

-      এতদিন যা হইচে, সেইডা আর এখন কামে দিব না, বুঝচ? সময় বদলায়। মানুষও বদলায়। আর আমাদেরও বদলাইতে হব টিকা যদি থাকতে চাও। আর যদি চাও আদর্শ নিয়া থাকবা, থাক। মনে রাইখো, বাপ রিটায়ার করচে, বাবা

 হবা দুই দিন পরে। আদর্শ দিয়া পেট ভরে না নবারুন।

-      তাইলে কি করতে কন?

-      কী আর কমু? কিছুই না। খবর আছে, আগামী দিনে আনেক প্রকল্প আইতাছে সরকারের। আহন তো সবই টেন্ডার হয়। তো একজন ঠিকাদার একটা প্রোপোজাল দিসে.... যা খরচ ওই দিব, বিনিময়ে...

-      বিনিময়ে কী কাকা?

সমীর প্রধানের কথাগুলো কানে পৌছালো বটে, কিন্তু সেই ডিসেম্বরের সন্ধ্যায় ঘেমে উঠেছিল ও। পার্টি আফিস থেকে বেরিয়ে এসে বাড়ি ফিরে কণিকার স্ফীত পেটটার দিকে তাকাতে পারল না নবারুন। চোখ নামিয়ে নিল।

২.

পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফিরে তালা খুলে ঘরে ঢুকল নবারুন। দেখল টেবিলে খাবার ঢাকা দেওয়া আছে। মাস ছয়েক হল কণিকার একটা চাকরি হয়েছে। হয়েছে মানে নবারুনই করে দিয়েছে। বি ডি ও অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পোষ্টে কিছু ছেলে মেয়ে নেওয়া হয়েছিল। সমীরদাই ডেকে বলল, ‘শোন নবারুন, সারাজীবন তো আর প্রধান-পঞ্চায়েত থাকবি না। সুযোগ যখন আইচে, বউমাটাকে ঢুকায় দে একটা কাজে। কম্পিউটারের ডিপ্লোমা আছে না তর বউইয়ের? যদিও কন্ট্রাক্টচুয়াল, পরে যদি পারমানেন্ট হয়, আশা তো আছেই। তর পোলাও বড় হইচে অহন। ঝামেলা কম। কি কইস, কথা কমু?’

প্রথমে নবারুন হ্যা-না কিছুই বলেনি। ভেবেছে, সে না হয় হল চাকরিকণিকার। কিন্তু পাবলিক ছেড়ে কথা বলবে কেন? গ্রামে কিলবিল করছে বেকার ছেলেমেয়ে। একটা চাকরীর জন্য কত দড়ি টানাটানি। লোকে যদি বলে, ‘দেখো, প্রধানগিরি করে কেমন বউটাকে চাকরিতে ঢুকিয়ে দিল’। এসব শুনে সমীরদা হেসে বলেছিল, ‘ছাড়তো। কে কী কইল, একদম মাথা ঘামাবি না। এমনিতেও কি লোকে ছাইড়া কথা কয়? এইত্তো গেল সপ্তাহে বাচ্চা সাহেবের মোড়ে পদেন রা মিটিং করল না, আরে এইবার আমাদের অপোনেন্টে যে খাড়াইচে, আমার কানে আইচে, মাইকে কইচিল, গত পনের বছরে পনের কেজি ওজন বাড়চে প্রধানসাহেবের। টিনের বাড়ি দোতলা পাকা দালান উঠল। কী কইরা হইতাছে, আপনারা নিশ্চয় বুঝেন। জবাব দেন ভোটের বাক্সে। তো এই কথাগুলান তো মাইনষেরই কথা। আবার দ্যাখ, মানুষই তোরে, আমাদের পার্টিরে জিতাব সামনের ইলেকশনে। মানে টা কি বুঝলি? পাবলিকরে কিছু দেও, তারা তোরে ভোট দিব, আর তুই দুই তলা চাইর তলা যা ইচ্ছা বানা, কোনো ব্যাপার না। দিনকাল পালটায় গ্যাছে নবারুন। অহন ধান্দা না করলে পাব্লিকই কইব এত বছর চেয়ারে থাইকা তুমি ছিড়লা টা কি?’

এখন একটা লাল রঙের স্কুটিতে বি ডি ও অফিসে যায় কণিকা। যাওয়ার সময় ছেলেকে স্কুলে নামিয়ে দেয়। নতুন একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হয়েছে, সেখানে। ফেরার সময় নিয়ে আসে। নবারূনের জন্য থালায় ভাত তরকারী বেরে চাপা দিয়ে রাখে। দু জনের কাছে দু সেট চাবি। গ্রামে থেকেও নাগরিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে সময় লাগে কিছুটা। লাগে কি?

সবে ভাতের থালাটা নিয়ে বসেছে, ওমনি কলিং বেল। এসময় আবার কে এল? কণিকার আসতে এখনো ঘণ্টা খানেক। বাইরে থেকে বউদি বউদি করে ডাকছে। ও জল এসেছে বোধ হয়। নবারুন হেঁকে ভেতরে আসতে বলল। একটা ছেলে কাঁধে করে জলের ড্রাম এনে রাখল।

 -উলটে দেব দাদা? ছেলেটা জিগ্যেস করল।

নবারুন ঘাড় নাড়ল। ইদানিং কোমর টা মাঝে মাঝে জ্বালাচ্ছে। এক সময় মাঠে লাঙল দিত বাবার সাথে। এখন শরীর জুড়ে চর্বির আস্তরণ। সে আস্তরণে ঢাকা পড়ে গেছে খাটুনি করা পেশীগুলো। জলের ড্রামটার দিকে তাকিয়ে খুব আসহায় লাগল নবারূনের হঠাৎ। মনে আছে, স্বচ্ছ পানীয় জল সরবরাহের দাবীতে বি ডি ও অফিস ঘেরাও এর কর্মসূচি নিয়েছিল পার্টি। নেতৃত্বে নবারুন।

“বন্ধুগণ, বেঁচে থাকার পানীয় জল থেকে আজ বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। একদিকে দেশের চুয়ান্ন শতাংশ মানুষ বিশুদ্ধ জলের অভাবে ভুগছে আর অন্যদিকে মাটির তলার জল শুষে নিচ্ছে বহুজাতিক রাঘব বোয়াল রা। প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর অধিকার কায়েম করছে সরকারের কাছের কিছু বহুজাতিক সংস্থা’’।

তখন বাজারে সদ্য এসেছে বোতলবন্দী ঠান্ডা পানীয়, পানীয় জল। মনে আছে, প্রচুর হাততালি পেয়েছিল নবারুন। শেষে বিডিও সাহেব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, খুব তাড়াতাড়ি সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে পানীয় জলের প্রকল্প রূপায়িত হবে। সেই প্রকল্প নবারূনের হাত ধরেই হয়েছিল। কয়েক কিলোমিটার বাদে বাদে একটি করে পানীয় জলের কল। কয়েকটি থেকে জল পড়ে এখনো।

খাওয়া শেষ করে বোতল থেকে জল খেল নবারুন। পয়সা দিয়ে কেনা জল। সেদিনের পানীয় জলের দাবীতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়া নবারুণকে বড্ড অচেনা লাগছে নিজের।

৩.

আর ছ দিন। প্রথম প্রথম শুধু নিজের বুথ টা দেখলেই হত। এখন গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত গ্রাম-পাড়া চষে বেড়াতে হয়। নবারূনের একটু বাড়ী বাড়ী ঘোরা, বয়স্কদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম, ‘কাকা দ্যাখেন একটু আমাকগুলাক। তোমাক তো নতুন করি কওইয়ার কিছু নাই। অভিজ্ঞতা দিয়ায় না টের পাবার ধৈচ্চেন,  তোমার সময়কার গেরাম আর আইজকের এই গেরাম – পাকা রাস্তা, প্রায় সগারে পাকা বাড়ী, এতলা সরকারি প্রকল্প – তোমরা বুঝদার মানষি’, দুপুর হলে গঞ্জের হোটেলেই ছেলে ছোকড়া সমেত নাকে মুখে একটু গুজে ফের টহল। তবে আজকাল আর শুধু কথায় চিড়ে ভেজে না। তবে দিনে দুপুরে তো আর সব কাজ হয় না। তার জন্য রাতের অপেক্ষা করতে হয়।

প্রায় মাস তিনেক ধরে নবারুণরা বুথ ভিত্তিক ডেটাবেস তৈরী করে। বাড়ী ধরে ধরে। প্রতিটা পরিবারে কত ভোটার, আমাদের না ওদের, গত ইলেকশনে কারা  আমাদের ছিল কিন্তু এবছর ওদের দিকে গেছে বা যাব যাব করছে, পালটি খাওয়ার সম্ভাব্য কারণ, কারা কারা আমাদের আছে অথচ তলে তলে ওদের হয়ে কাজ করছে – এসব নিয়ে গোপন শলা পরামর্শ চলে গভীর রাত অবধি।

-      নবারুন রে, এই বছর কিন্তু খরচ পাতি ভালোই হবে, যা বুঝতাছি। সমীর প্রধান কাচা-পাকা দাড়ি চুলকাতে চুলকাতে বলে।

-      কেন এমনটা ভাবতেছেন? নবারূনের কণ্ঠে জিজ্ঞাসা।

-      তোমারে আগেও কইচি, মানুষ অহন ইনষ্ট্যান্ট লাভ চায়। তোমারে ভোটে জিতাইলে তুমি সৎভাবে পঞ্চায়েত চালাবা, সব প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটাবা, জনগণের ক্ষমতায়ন আরো বাড়বে, রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সব আগের চেয়ে আরো ভালো হবে – এইডা কিন্তু লোকে চায় না অহন। মানে বেশীরভাগ লোকের ধারনা, তুমি প্রধান হবা, ট্যাকা করবা, কর, কিন্তু আমাদেরো কিছু ছাড়ো – এই হইল মানসিকতা। তোমারে আগেও কইচি, শুধু আদর্শ ধুইয়া ভোটে জেতা যায় না নবারুন।

-      কিন্তু এত টাকা...

-      টাকার ব্যাপারটা আমার উপর ছাড়ো।

সাড়ে ন টার সময় পবন কাকার বাড়ী যাবার সময় প্যান্টের পকেট টা আরেকবার দেখে নিল নবারুন। না ঠিক আছে খামটা। সে নিজে সাধারণত যায় না এসব কাজে। সাকরেতরাই সামলে দেয়। কিন্তু এই কেস টা আলাদা। স্পেশালিস্ট ডাক্তার দরকার। পবন কাকার ছয় ছেলে এক মেয়ে। তিন ছেলের বিয়ে হয়েছে। সব মিলিয়ে পনের খানা ভোট। সমীর প্রধানের গোপন রিপোর্ট অনুযায়ী এবছর পালটি খাওয়ার প্রবল সম্ভবনা।

পবন কাকার ঘরে কিছু মামুলী কথাবার্তার পর আসল কথাটা পারে নবারুন।

-      কাকা, আপনাদের পাশে কি ছিলাম না আমরা, বলুন? যখন যা দরকার হবে, আমাকে ফোন করবেন। আপনাদের নবারুন প্রধান হওয়ার আগে যেমন ছিল, এখনো ঠিক তেমনটাই আছে, বুঝলেন? এটা রাখুন কাকা।

আশে পাশে কেউ আছে কিনা দেখে নিয়ে খামটা পবন কাকারদিকে বাড়িয়ে দেয় নবারুন।

-      পয়সা দিয়ে ভোট কিনতে এসেছেন নবারুনদা?

একটা ঝটকা খায় নবারুন। বুল্টি কখন দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে, খেয়াল করেনি। পবন কাকার ছোট মেয়েটা কবে এত বড় হয়ে গেল, খেয়াল করেনি নবারুন। শুনেছে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। নবারুন যে কলেজে পড়ত সেখানে। ডেইলি প্যাসেঞ্জারী করে।

-      স্কুলে পড়ার সময় থেকে আপনাকে দেখে বড় হয়েছি। ভাবতাম, রাজনীতি করব মন দিয়ে। আপনার মত। আপনার মত পল সায়েন্সে অনার্স নিয়েছি। সবাই দুচ্ছাই করেছে। বলেছে, কোনোদিন চাকরী পাবি না। বুল্টি হাঁপাচ্ছে।  পবন কাকার দু চোখ ভয়ার্ত।

-      আজ বাবার হাতে খামটা তুলে দেওয়ার মানে আপনি বুঝতে পারছেন? আগামী দিনে যদি রাস্তা খারাপ হয়ে পড়ে থাকে, রাস্তার কল দিয়ে যদি কাদা জল বেরোয়, বন্যা এলে যদি মানুষ ত্রিপাল, চিড়ে মুড়ি না পায়, তাহলে আপনাকে আর কিছু বলার মুখ থাকবে আমাদের? এই খামটাই আমাদের উঁচু মাথাগুলোকে নিচু করে দেবে। আপনার মত।

নবারুনের মাথাটা নিচু হয়ে গেল। বুকের সাথে সেঁটে গেছে। আড়চোখে তাকিয়ে মেয়েটার চোখে আগুন দেখতে পেল নবারুন।

                                 
















No comments:

Post a Comment