Tuesday, December 31

অনুরঞ্জনা ঘোষ নাথের অণুগল্প : জিঙ্গল বেলস





অনুরঞ্জনা ঘোষ নাথ
জিঙ্গল বেলস
       

সুরম্য আজ দারুণ মজায় কাটাচ্ছে দিনটা। সান্তা আজ ওকে ওর পছন্দের আয়রনম্যান টয়, নতুন ফুটবল আর স্পাইক শু দিয়েছে। যদিও ক্লাস টু তে উঠে ও এখন জানে ওর মাম্মা আর বাবাই হল সান্তা। তবুও ও সান্তাকে চিঠি লেখে গ্রিটিংস কার্ডে। আজ ২৫ ডিসেম্বরের  সকালে কেক কেটে, গিফ্ট পেয়ে, দুপুরে বাবা মার সঙ্গে ঘুরে বাড়ি ফিরছিল ও।  ফেরার সময়ে গোলপার্কের পাশে বাবা একটু গাড়ি পার্ক করেছিলো রাতের খাবার কেনার জন্য। তখন ও দেখল রাস্তায় গাছের তলায় ল্যাম্প পোষ্টের আলোতে দুটো বাচ্চা মেয়ে পড়াশোনা করছে। আর তার মধ্যে একটা মেয়ে লিখছিল আর একজন ছবিতে একটা ভাঙ্গা রঙের বাক্স থেকে রং নিয়ে রং করছিল। ও গাড়ি থেকে দৃশ্যটা দেখতে পেয়ে বাবাকে বললো, 'বাবা আমায়  দুটো রঙের বাক্স আর একটু ড্রয়িং পেন্সিল আর দুটো ড্রইং খাতা কিনে দেবে?'
বাবা জিজ্ঞাসা করাতে ও বলল, 'সামনের ফুটপাতে দেখো দুটো বাচ্চা মেয়ে বসে পড়াশোনা করছে। ওদেরকে কিছু দেয়নি সান্তা। চলনা বাবা, আমরাই সান্তা হয়ে ওদের কিছু...।'

ওর কথা শুনে ওর মা-বাবার চোখে জল এসে গেল প্রায়। সঙ্গে সঙ্গে ওর মা আর বাবা মিলে গোলপার্কের একটা খেলনার দোকান থেকে দুটো পুতুল আর পাশের বইখাতার দোকান থেকে দুটো ড্রইং খাতা, আঁকার পেন্সিল ও মোম রং কিনে সবকিছু সুরম্যকে দিল আর বলল, 'যাও,  তুমি গিয়ে ওদের দিয়ে এসো।' সুরম্য খুব খুশি হয়ে ওদের দুজনকে হাতে করে গিফট গুলো দিয়ে দিল এবং ওরাও খুব খুশি হয়ে নিল। মেয়ে দুটির নাম রুবি সুবি। রুবি সুবি জানালো যে ওরা একটা প্রাইমারি স্কুলে পড়ে। ওরা সুরম্যকে 'থ্যাংক ইউ' জানালে সুরম্য ওদের 'ওয়েলকাম' বলল।

খুব খুশি হয়ে গাড়িতে উঠে দরজা বন্ধ করতে করতে সুরম্য গুনগুন করে  গেয়ে উঠল, 'জিংগেল বেল, জিংগেল বেল,  জিংগেল অল দ্য ওয়ে/ ও হোয়াট ফান, ইজ টু রাইড ইন আ ওয়ান হর্স ওপেন স্লেজ......