Wednesday, December 11

তরুনার্ক লাহার অণুগল্প : মাসুল





তরুনার্ক  লাহা
মাসুল
                           
অসহ্য!আর না।সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় কণিকা ।কতদিন আর জোড়াতালি দিয়ে চলবে।অন্য কেউ হলে অনেক আগেই.....
নন্দ যদি একবার ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে তার কাছে আসত তাহলে সবকিছুই মিটে যেত।এই কটা দিন ঘরেই আবদ্ধ রেখেছিল নিজেকে ।তাকিয়ে থাকত দরজার দিকে।কান পেতে থাকত নন্দ'র কণ্ঠস্বর শোনার জন্য --এই কণি,আমি এসেছি।
কণিকার মনে পড়ে তাদের পরিচয়ের প্রথম দিনটা।বেশ ঘটনা বহুল ।হন্তদন্ত হয়ে ভিড় বাসে উঠতে যাচ্ছিল কণিকা ।পাদানিতে পা দিতেই হঠাৎ বাস ছেড়ে দেয়।বেসামাল হয়ে পড়ে যাচ্ছিল সে।লোকজনের চিৎকারে বাস থামে।ততক্ষণে নন্দ এসে কণিকাকাকে ধরে ফেলে।সে যাত্রায় বেঁচে যায় কণিকা ।পরের বাসে দুজনেই দুর্গাপুরে ফেরে।একই সিটে পাশাপাশি দুজন ।পরের দিন থেকে সহযাত্রী ।মাসচারেক পরে চার হাত এক হয়।কণিকা খুশী ।নন্দও।বছর ঘুরতে না ঘুরতে দেখা দেয় সম্পর্কে ঘুণপোকা।প্রতি ব্যাপারেই বাবাকে টানে।নন্দ একেবারেই পছন্দ করে না।শুরু হয় কথা কাটাকাটি।কণিকা একদিন তল্পিতল্পা গুটিয়ে সোজা বাপের বাড়ি।
দিন যায়।কণিকা ভাবে তাকে ঠিক নিতে আসবে নন্দ ।নন্দ আসে না,তার ফোনও আসে না।কণিকার মনে অভিমানের আরাবল্লী ।পরে বাবার চাপেই কণিকা সিদ্ধান্ত নেয় নন্দ'র সাথে ডিভোর্স।
কণিকা উকিলের কাছে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ।সাথে তার বাবা।এমন সময় পিয়ন এসে একটা চিঠি দিয়ে যায়।নন্দ'র লেখা ।কণিকা তাড়াতাড়ি চিঠিটা খুলে পড়তে থাকে।স্তব্ধ হয়ে যায় সে।পিছন ফিরে তাকায় বাবার দিকে।যাকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করত সে মানুষটা এত নীচ?দশ বছর আগেই সামান্য স্বার্থের কারণে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয় নন্দ'র বাবাকে।সেই কারণেই নন্দ তার বাবাকে.....
কণিকা তার বাবাকে পেছনে রেখে স্বামীর বাড়ির পথ ধরে।মনে মনে ভাবে-চিঠিটা না এলে কি ভুলটাই না করতে যাচ্ছিল !তার মাসুল গুনতে হতো সারাজীবন ।
                     

1 comment:

  1. Darun sir..... R aktu porte ichhe korchhilo... A to chhotogolper cheyeo chhoto .... Ses hoyeo hoila na ses

    ReplyDelete